আপনার হ্যান্ডসেটটি রেজিষ্ট্রেশন করুন ফ্রি / আনঅফিসিয়াল থেকে অফিসিয়াল করুন
১ জুলাই হতে ক্রয়কৃত ফোন রেজিষ্ট্রেশন করতে হবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা- বিটিআরসি।
তাহলে প্রশ আসতে পারে আপনার হাতে থাকা ফোন টি কি বন্ধ হয়ে যাবে?
BTRC জানিয়েছেন ৩০ জুন পর্যন্ত বাংলাদেশের মোবাইল নেটওয়ার্কে ব্যবহৃত বৈধ-অবৈধ সকল সেটই নিবন্ধিত হয়ে যাবে। গ্রাহকদের হাতে থাকা কোন সেট বন্ধ হবে না।
আপনি আপনার ব্যবহৃত মোবাইল হ্যান্ডসেট এর বর্তমান অবস্থা কিভাবে যাচাই করবেন?
ধাপ ১ - আপনার মোবাইল ফোনর মেসেস অপশনে গিয়ে KYD লিখে একটি Space দিয়ে ১৫ ডিজিটের IMEI নম্বরটি লিখুন।
উদাহরণস্বরূপঃ KYD 123456789012345
ধাপ ২ - IMEI নম্বরটি লিখার পর ১৬০০২ নম্বরে প্রেরণ করুন।
ধাপ ৩ - স্বয়ংক্রিয়ভাবে তাৎক্ষনিক ফিরতি মেসেস এর মাধ্যমে মোবাইল হ্যান্ডসেটের বৈধতা সম্পর্কে জানতে পারবেন।
কিভাবে IMEI নাম্বার বের করবেন?
IMEI নাম্বার ২ ভাবে দেখা যায়, প্রথমত ফোনের setting
এ গিয়ে About phone অপশনে IMEI নাম্বার পাওয়া যায়।
অন্যটি হচ্ছে USSD কোড ডায়াল করার মাধ্যমে,ফোনের ডায়াল মেনু থেকে *#06# ডায়াল করলেই IMEI নাম্বার পাওয়া যায়।
এছাড়া মোবাইলের বক্সে কিংবা মোবাইলের পেছনে একটি স্টিকারেও এটি লেখা থাকে।
অবৈধ মোবাইল বন্ধ হওয়া নিয়ে BTRC কি বলে?
১লা জুলাই ২০২১ তারিখ হতে যেকোন মাধ্যম যেমন বিক্রয় কেন্দ্র, ই-কমার্স সাইট ইত্যাদি হতে যেকোন মোবাইল হ্যান্ডসেট ক্রয়ের পূর্বে অবশ্যই হ্যান্ডসেটটির বৈধতা যাচাই করবেন এবং ক্রয়কৃত হ্যান্ডসেট এর রশিদ সংরক্ষণ করবেন।
আপনার মোবাইল বা হ্যান্ডসেটটি বৈধ হলে পোর্টাল এর Special Registration সেকশনে গিয়ে মোবাইল হ্যান্ডসেট এর IMEI নম্বরটি এবং প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস সাবমিট করলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে এনইআইআর সিস্টেমে নিবন্ধিত হয়ে যাবে।
বিটিআরসির মহাপরিচালক শামসুল আলম বলেছেন তারা প্রাথমিকভাবে শুধুমাত্র সেট বৈধ না অবৈধ সেটা চিহ্নিত করবেন। বৈধ সেটের তথ্য ডাটাবেজে তুলবেন।
এর তিন মাস পর অবৈধ সেটগুলোর বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
BTRC এর নীতিমালায় কি আছে?
১ লা জুলাই থেকে মূলত ন্যাশনাল ইকুইপমেন্ট আইডেন্টিফিকেশন রেজিস্ট্রার (এনইআইআর) প্রযুক্তি সক্রিয় হতে যাচ্ছে।
যেখানে বাংলাদেশের নেটওয়ার্কে থাকা সচল সব মোবাইল সেটের তথ্য নিবন্ধন করা হবে।
ওই ডাটাবেজে মূলত হ্যান্ডসেটের IMEI নম্বর, যে সিম চালু করা হবে তার নম্বর (MSISDN), সিমের সাথে দেয়া গ্রাহকদের বায়োমেট্রিক পরিচিতি সব তথ্য সিঙ্ক্রোনাইজ করা হবে।
এরি মধ্যে বাংলাদেশে ব্যবহৃত বৈধ অবৈধ মিলে মোট ১৫ কোটি মোবাইল ফোন সেট নিবন্ধিত হয়েছে বলে জানা গেছে।
তবে পহেলা জুলাইয়ের পর থেকে শুধুমাত্র বৈধ উপায়ে আমদানিকৃত সেট নিবন্ধন পাবে।
তাই এই সময়ে যেকোন দোকান, বিক্রয় কেন্দ্র, অনলাইন ই-কমার্স সাইট থেকে মোবাইল হ্যান্ডসেট কেনার আগে অবশ্যই হ্যান্ড-সেটটি বৈধ কিনা যাচাই করে নেয়া খুব জরুরি বলে জানিয়েছেন বিটিআরসির মহাপরিচালক শহীদুল আলম।
সচল কিন্তু অব্যবহৃত মোবাইল হ্যান্ডসেট নিবন্ধন হবে?
কারও যদি একাধিক সেট থাকে যেগুলো সচল কিন্তু ব্যবহার হচ্ছে না।
সেগুলো এবার স্বয়ংক্রিয়ভাবে নিবন্ধন হয়ে যাবে।
সেই সেটটিতে যে নামের সিমটি সর্বশেষ ব্যবহার করা হয়েছিল, সেই নামেই সেটটি নিবন্ধন হবে।
তখন ওই সেটে অন্য নামের কোন সিম চলবেনা।
তাই অব্যবহৃত সেটগুলো যে নামে নিবন্ধন করতে চান, সেই নামের নিবন্ধিত সিম ৩০শে জুন বা তার আগেই চালু করতে হবে।
একই মোবাইলে একাধিক সিম ব্যবহার করা যাবে?
নিবন্ধিত সিম সেটে সক্রিয় করলে সেটটি ওই নামে স্বয়ংক্রিয়ভাবে নিবন্ধন হয়ে যাবে।
ওই সেটে যদি দ্বিতীয় সিম ব্যবহার করতে হয় তাহলে সেটাও অবশ্যই একই নামে নিবন্ধিত সিম হতে হবে।
অর্থাৎ কারও যদি নিজের নামে একাধিক সিম নিবন্ধিত থাকে। তাহলে তিনি একটি নিবন্ধিত সেটেই সব সিম ব্যবহার করতে পারবেন।
তবে আপনার নিবন্ধিত সেটে অন্য নামের সিম ব্যবহার করার সুযোগ দেয়া হচ্ছে না নতুন নীতিমালায়।
তবে এই নিয়ম তিন মাসের জন্য শিথিল থাকবে।
কারণ এখনও বাংলাদেশের নিম্নবিত্ত পরিবারগুলোর কয়েকজন মিলে একটি সেটে সিম বদলে ব্যবহার করে থাকেন।
তিন মাস পর সিদ্ধান্ত নেয়া হবে যে একজনের সেট আরেকজন অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করতে পারবে, নাকি কিনা।
এ ব্যাপারে মি. আলম বলেন, "আমরা যদি এই তিন মাসের পর্যবেক্ষণে দেখি যে এক সেটে একাধিক সিম ব্যবহারের সংখ্যাটা বেশি তাহলে আমরা অপশন দিতে পারি যে, আপনি আপনার হ্যান্ডসেটটি লক করতে চান কিনা।"
"যারা দামী সেট ব্যবহার করেন এবং গ্রাহক যদি চান যে তার সেট তিনি ছাড়া অন্য কেউ ব্যবহার করবে না। তার তথ্য সুরক্ষিত রাখতে চান। তাহলে তিনি সেটা লক করতে পারবেন।"
এতে দুটি শ্রেণীর মানুষের স্বার্থ রক্ষা হবে।
তাছাড়া কেউ সেট লক করার অপশন বেছে নিলে তার অনুমোদন ছাড়া এই সেট অন্য আর কেউ ব্যবহার করতে পারবে না।
এতে হ্যান্ডসেট চুরি যাওয়ার প্রবণতা কমবে। তথ্য সুরক্ষিত থাকবে।
আপনার হ্যান্ডসেটে অন্যকেও সিম ব্যবহার করতে পারবে কি না?
এখন পর্যন্ত বিটিআরসির পক্ষ থেকে একজনের সেট আরেকজন ব্যবহারের কোন সুযোগ রাখা হচ্ছে না।
যদি অন্য সেট ব্যবহার করতেই হয়, তাহলে ওই সেটটি আগে যার নামে নিবন্ধিত ছিল, তার অনুমোদন নিতে হবে।
এ ব্যাপারে মি. আলম বলেন, "যদি আপনার সেটে অন্য আরেকটা সিম ঢুকানো হয়, তাহলে নেটওয়ার্ক পাবেন না। তখন বলা হবে যে, আগের যে ইউজার ছিলেন তার অনুমোদন নিয়ে নতুন সিম দিয়ে পুনঃনিবন্ধন করতে হবে।"
মোবাইল ফোন ছিনতাই হয়ে গেলে বা হারিয়ে গেলে কি হবে?
কারো হ্যান্ডসেট চুরি বা ছিনতাই হলে কিংবা হারিয়ে গেলে বিটিআরসির নিয়মানুযায়ী সেটা অটোমেটিক লক হয়ে যাওয়ার কথা।
কিন্তু বিষয়টা যেহেতু তিন মাসের পর্যবেক্ষণে আছে তাই তার আগে কোন ফোন লক করার সুযোগ নেই।
তার আগ পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট অপারেটরের কাস্টমার কেয়ারে ফোন হারিয়ে যাওয়া বা চুরি যাওয়ার অভিযোগ করলে প্রতিষ্ঠানটি আপনার পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার ভিত্তিতে ফোনটি লক করে দেবে। যেন আপনার ফোনটি কেউ কোথাও ব্যবহার করতে না পারে।
ওই হ্যান্ডসেটে আর কোনও সিম কাজ করবে না।
একইভাবে বিটিআরসির পোর্টালে গিয়ে, প্রয়োজনীয় তথ্য প্রমাণ দিয়ে অভিযোগ দায়ের করা যাবে।
ফোন বিক্রি বা কাউকে দিতে চাইলে / সেকেন্ড হ্যান্ড ফোন কিনলে কি করতে হবে?
কেউ যদি তার নিবন্ধিত সেট অন্য কাউকে দিতে চান, বিক্রি করতে চান বা নিজে অন্যের ব্যবহৃত ফোন কিনতে চান তাহলে সেটটিকে নতুন গ্রাহকের নামে পুনঃনিবন্ধন করতে হবে।
সেক্ষেত্রে পুরনো গ্রাহকের নাম অনিবন্ধিত করে যাকে দেয়া হচ্ছে তার নামে হ্যান্ডসেটটি পুনরায় নিবন্ধন করিয়ে নিতে হবে।
"এক্ষেত্রে আগের ইউজারের এনআইডি কার্ডের শেষ চারটা ডিজিট চাওয়া হতে পারে। ডিজিট মিলে গেলে এবং সেট/সিম নিবন্ধিত হলে পুনঃনিবন্ধন সম্পন্ন হবে। নতুন এই সেটটি নতুন গ্রাহকেই ব্যবহার করতে হবে।" বলেন মি. আলম।
এ ছাড়া অপারেটরদের কাস্টমার কেয়ারে গিয়ে বিক্রয়কারী ব্যক্তি নতুন গ্রাহকের নামে হ্যান্ডসেটটি নিবন্ধিত করতে পারবেন।
বিদেশ থেকে ফোন কিনে আনলে বা বিদেশ থেকে ফোন উপহার দিলে কি করবেন?
একজন বিদেশ ফেরত যাত্রী দুটি মোবাইল সেট শুল্ক ছাড়া বৈধভাবে নিয়ে আসতে পারবেন।
বিদেশ থেকে বৈধভাবে কিনে আনা বা উপহার হিসেবে পাওয়া হ্যান্ডসেটে বাংলাদেশের সিম চালু করার পর সেটা স্বয়ংক্রিয়ভাবেই নেটওয়ার্কে সচল হয়ে যাবে।
তখন মোবাইলে মেসেজের মাধ্যমে জানানো হবে যে আপনার সেটটি নিবন্ধন করুন। সেখানে ওয়েবসাইটের লিঙ্ক দেয়া হবে।
সেটায় ক্লিক করে প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে সেটটি নিবন্ধন করে নিতে হবে।
বিদেশ থেকে ক্রয়কৃত অথবা উপহারপ্রাপ্ত মোবাইল হ্যান্ডসেট নিবন্ধন করার প্রক্রিয়াঃ
বিদেশ থেকে আনা বা উপহার পাওয়া হ্যান্ডসেট নিবন্ধনের জন্য neir.btrc.gov.bd ওয়েবসাইটে গিয়ে গ্রাহককে অ্যাকাউন্ট খুলতে হবে।
নিচের মত ওয়েবসাইটে গ্রাহকের নাম,মোবাইল নাম্বার দিয়ে একাউন্ট খুলে নিন।
নিবন্ধন করলে নিচের মত আসবে।
এরপর আপনার একাউন্ট যাচাইয়ের জন্য উক্ত নাম্বারে OTP পাঠানো হবে যার মেয়াদ থাকবে ১০ মিনিট।
OTP বসিয়ে "জমা" দেওয়ার পর Success দেখাবে।
এখন আপনার ফোনটি রেজিষ্ট্রেশন এর জন্য "হ্যান্ডসেট বিশেষ নিবন্ধন " এ ক্লিক করুন।
এখানে ফোনের IMEI, এনআইডি বা পাসপোর্ট এবং বাংলাদেশে প্রবেশের সময় ইমিগ্রেশন পাতার স্ক্যান কপি বা ছবি তুলে "জমা দিত" হবে।
তথ্যের সত্যতা যাচাই হলে সেটটি বৈধ হবে যাবে।
চাইলে এখান থেকেও ফোনের বৈধতা যাচাই করতে পারবেন,এর জন্য আপনাকে "হ্যান্ডসেটের IMEI যাচাই করুন" এ ক্লিক করুন।
আর যদি বিদেশ থেকে ফোন আনার সংখ্যা দুই এর বেশি হয় অর্থাৎ দুইটা সেটের পরবর্তী ৬টি সেট শুল্ক দিয়ে আনতে হবে। (স্মার্টফোনের ক্ষেত্রে ৫৫.৬০% এবং বাটনযুক্ত ফিচার ফোনের ক্ষেত্রে ৩৪.০০%।)
সে সেটগুলো আনতে শুল্ক দিতে হয়েছে, সেটার শুল্ক পরিশোধের রশিদের স্ক্যান কপি বা ছবি তুলে ওয়েবসাইটের লিঙ্কে যুক্ত করতে হবে।
এছাড়া বিদেশ থেকে কোন মোবাইল উপহার পেলে আপনার এনআইডি কার্ডের নম্বর, ডেলিভারি স্লিপ পাঠিয়ে সেটটি নিবন্ধন করা যাবে।
এছাড়া ৮টির বেশি মোবাইল ফোন হ্যান্ডসেট আনলে পরবর্তী এক বছরের মধ্যে বিটিআরসি থেকে "ভেন্ডার এনলিস্টমেন্ট সার্টিফিকেট" গ্রহণ করতে হবে।
সেইসঙ্গে শুল্ক এবং অর্থদণ্ড পরিশোধ করে অতিরিক্ত মোবাইল ফোন হ্যান্ডসেটগুলো কাস্টমস থেকে খালাস করা যাবে।
এই মোবাইলগুলোর ক্ষেত্রে অতিরিক্ত তথ্য দেয়ার প্রয়োজন হতে পারে।
কোন মন্তব্য নেই